পর্বতযাত্রা এবং তীর্থযাত্রা- এই দুইয়ের যুগলবন্দির কথা ভাবতে বসলে প্রাচ্যভূমির সর্বাধিক মানুষের আকর্ষণের কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে রয়েছে মানস সরোবর ও কৈলাস। সাধক, তীর্থযাত্রী, হিমালয়প্রেমী, ভ্রমণকারী— কত মানুষ যুগে যুগে যাত্রা করেছেন এই পথে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলেছে এই যাত্রার পরিস্থিতি, বন্দোবস্ত, ধরন। যাত্রীদের কেউ কেউ লিখেছেন তাঁদের মানস সরোবর ও কৈলাস যাত্রার অভিজ্ঞতা। নানা ব্যক্তির অভিজ্ঞতায় কত না ডাইমেনশনে ধরা দিয়েছে এই পার্বত্য তীর্থ ও তার পথ! সেইসব রচনার মধ্যে কোনো-কোনোটি ‘ক্লাসিক’ হয়ে থেকে গিয়েছে বাংলা সাহিত্যের ভাণ্ডারে। কিন্তু যতবারই এই তীর্থ ও তীর্থপথ বিষয়ে লেখা হয়েছে, ততবারই পাঠক আকৃষ্ট হয়েছেন এই পথের ‘অপ্রাকৃত’ প্রাকৃতিক মহিমায়। এই আকর্ষণ তৈরি করার কৃতিত্ব যতটা লেখকদের, ততটা বা তার চেয়ে কিছু বেশিই হয়তো, স্থানমাহাত্ম্যের।
‘প্রথম মানস’ আবহমানের এই তীর্থযাত্রাপথে এবং এতদ্বিষয়ক গ্রন্থযাত্রা- পথেও আরেকটি বিনম্র সংযোজন। এই গ্রন্থে লেখকের অনায়াসপ্রবাহিত সাবলীল গদ্য, আশ্চর্য এবং পরিমিত রসবোধ, প্রকৃতির অপার লীলা এবং বিশ্বনাচের কেন্দ্রে ছন্দ জাগানো লীলাময়ের প্রতি তাঁর বিস্ময়াবিষ্ট মুগ্ধতা গ্রন্থটিকে রসস্থ করে তোলে। তীর্থযাত্রাবর্ণনার প্রবাহে অনায়াসে মিশে যায় এই পার্বত্য অঞ্চলের ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য, বিচিত্র মানবজীবনযাত্রা, মনুষ্যেতর প্রাণীদের কথাও।
Reviews
There are no reviews yet